200)ইতিহাসে 15 আগস্ট (15 AUGUST IN THE HISTORY) ।-Written by Junayed Ashrafur Rahman
200 ) ইতিহাসে 15 আগস্ট (15 AUGUST IN THE HISTORY) ।-Written by Junayed Ashrafur Rahman ✒
🌟 বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্য কর্নেল ফারুক নিজে পরিকল্পনা করে 15 আগস্ট মানে , 14 আগস্ট দিবাগত রাতকে নির্ধারণ করেছিলো।
🌟 ইতিহাসে 15 আগস্ট তারিখটা দুই কারণে স্মরণীয়।
1 ) 1947 সালের 15 আগস্ট বৃটেনের কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতা অর্জন।
2 ) 1975 সালের 15 আগস্ট কর্নেল ফারুকের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে মেজর ডালিম , রশিদদের কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা।
🌟 উল্লিখিত দুই স্মরণীয় ঘটনার মধ্যে আমার আজকের আলোচ্য বিষয় 1975 সালের 15 আগস্ট।
🌟 1971 সালে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তখনের পূর্ব পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর যে সকল সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন - তিনিদের মধ্যে কর্নেল ফারুক , ডালিম , রশিদরাও ছিলো।
🌟 দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে দুইটা গ্রুপ ছিলো।
যিনিরা বাংলাদেশে অবস্থান করে যুদ্ধ করেছিলেন , তিনিদের একটা গ্রুপ।
আর যিনিরা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে বন্দী ছিলেন এবং যুদ্ধের পরে পাকিস্তানের গভমেন্ট কর্তৃক দেশে ফিরত এসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন - তিনিদের একটা গ্রুপ।
উল্লিখিত দুই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে প্রথম গ্রুপের সদস্যরাই ছিলেন বেশি ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী সেনা সদস্য।
আর উক্ত ক্ষমতাবানদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তি ছিলো কর্নেল ফারুক , ডালিম আর রশিদরা।
🌟 কিন্তু কর্নেল ফারুক 1973 সাল থেকে সন্দেহ করতে থাকে যে , পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ ভারতের গোলামে পরিণত হয়েছে। তাই সে পরিকল্পনা করে নিজেই ক্ষমতা দখল করে ভারতের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার।
তাই সে রাষ্ট্রবিজ্ঞান , অর্থনীতি , সাহিত্য , আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করে আর ডালিম , রশিদদেরকে নিয়ে দল বানাতে থাকে।
কর্নেল ফারুক বুঝেছিলো , বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে , সেটা সামলানোর জন্য শুধু অস্ত্রই যথেষ্ট না - বরং প্রয়োজন রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্যাপক জ্ঞান।
আবার কর্নেল ফারুক ছিলো তখনের প্রভাবশালী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফের ভাগ্নে।
তাই মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার ও জেনারেল খালেদের ভাগ্নে হওয়ার কারণে ক্যান্টনমেন্টেও কর্নেল ফারুক ছিলো বেশি ক্ষমতার অধিকারী।
মূলতঃ এই সকল কারণেই কর্নেল ফারুক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করার সাহস পেয়েছিলো।
🌟 তবে , একজন ঐতিহাসিক হিসেবে আমি বলবো , কর্নেল ফারুক ব্যক্তিগতভাবে যে বুদ্ধি ও সাহসের অধিকারী ছিলো , তাতে সে জেনারেল খালেদের ভাগ্নে না হলেও ঐ রকম অপরাধ করতে পারতো। এবং 1971 সালের মুক্তিযুদ্ধ কর্নেল ফারুক নিজে করেছিলো - ওর মামা জেনারেল খালেদ করে দেয়নি।
🌟 এবং মেজর রশিদও তখন ছিলো প্রচণ্ড ক্ষমতাবান সেনা অফিসার। প্রকৃতপক্ষে তখনের রাজনীতিক আর সেনা অফিসারদের যোগাযোগের মাধ্যম ছিলো মেজর রশিদ।
🌟 আর মেজর ডালিম ছিলো মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু উগ্র মেজাজের সেনা অফিসার। মূলতঃ কর্নেল ফারুকের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের জন্য যে কয়জনের ভূমিকা ছিলো বেশি - এদের মধ্যে মেজর ডালিম অন্যতম।
শুধু তাই না , বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তখনের সেনাপ্রধান জেনারেল শফিউল্লাহকে গ্রেফতার করা এবং খন্দকার মোশতাককে দিয়ে রাষ্ট্রপতির শপথ পাঠ করানো - এগুলো মেজর ডালিম নিজেই করেছিলো।
🌟 বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কর্নেল ফারুক অত্যন্ত কৌশলে 14 আগস্ট দিবাগত রাত , মানে 15 আগস্টকে নির্ধারণ করেছিলো।
তখন ছিলো শ্রাবণ মাস। আকাশ ছিলো মেঘাচ্ছন্ন - কিন্তু তুলনামূলকভাবে বৃষ্টি ছিলো কম।
তাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর পেয়ে যদি ভারতের বিমান বাহিনী বাংলাদেশে আসতে চায় , তবে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ হবে বিরাট একটা বাঁধা।
এবং তখন রাতের বেলা কর্নেল ফারুকের নেতৃত্বে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কতিপয় সেনা সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ট্যাঙ্কের ব্যবহার করা হতো।
তাই 15 আগস্ট যখন কর্নেল ফারুক ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্যাঙ্ক নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের দিকে যাচ্ছিলো , তখন রক্ষী বাহিনীর কেউই বাঁধা দেয়নি। কেননা , রক্ষী বাহিনী মনে করেছিলো, কর্নেল ফারুকের নেতৃত্বে ট্যাঙ্ক নিয়ে যাতায়াতকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ঘটনা।
মূলতঃ এভাবেই কর্নেল ফারুক , রশিদ আর ডালিমরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলো।
🌟 বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা বাংলাদেশের ইতিহাসে ছিলো চরম অপরাধ। মৃত্যুদণ্ডই ফারুক , রশিদ আর ডালিমদের শাস্তি।
🌟 আজ 15 আগস্ট 2020।
1920 সালের 17 মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। অর্থাৎ , আজ বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবর্ষের মৃত্যু দিবস।
Comments
Post a Comment